রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৫ অপরাহ্ন

‘এগল্যা নেকে নিয়ে কোনও লাব নাই’

‘এগল্যা নেকে নিয়ে কোনও লাব নাই’

স্বদেশ ডেস্ক:

‘এগল্যা নেকে নিয়ে কোনও লাব নাই। কষ্টের কতা তোমাহেরেক কয়া কী কাম হবে?’ সম্প্রতি বাঙ্গালী নদীর ভাঙনকবলিত গাইবান্ধার সাঘাটার রামনগর গ্রামে সাংবাদিকদের কাছে নিজের কষ্টের কথা এভাবেই ব্যক্ত করেন ভাঙনের কবলে পড়া অমিতন বেগম।

সরেজমিন দেখা যায়, যমুনার পানি কমতে শুরু করলেও বাঙ্গালী নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। সেইসঙ্গে বাঙ্গালী নদীর ভাঙন তীব্র রূপ নিয়েছে। চোখের সামনেই একের পর এক ভাঙছে বসতভিটা আর আবাদি জমি। নিজেদের ঘরবাড়ি ভাঙনের কবল থেকে সরানো নিয়ে ব্যস্ত নদীপারের মানুষ। বড় বড় গাছপালা কেটে নিরাপদে নিচ্ছেন তারা।

ভাঙনের কবলে পড়ে ৫ বার বাড়ির জায়গা হারানো রামনগর গ্রামের আবুল হোসেন প্রধান জানান, নদীর সঙ্গে আর টিকে থাকতে পাচ্ছি না। প্রতিবারই বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে চলে যায়। বিগত কয়েক বছরে ৮ বিঘা জমি নদী খেয়ে ফেলেছে। ৫ বিঘা জমি নদীতে হারানো রফিকুল ইসলাম বলেন, কী করব, ভাঙনের দৃশ্য চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার নেই আমাদের। এ পর্যন্ত বসতভিটা হারিয়ে রামনগর, জালালতাইড়, বাঙাবাড়ি, কচুয়া ও গুজিয়া এলাকায় প্রায় ১০০ পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। ভিটেমাটি হারানো লোকজন অন্যত্র গিয়ে অনেক কষ্ট করে জীবনযাপন করছেন। এখনো হুমকির মুখে রয়েছে বেশ কিছু পরিবারের বসতবাড়ি। যে কোনো সময় নদীতে চলে যাবে ১০টি পরিবারের বসতভিটা।

চারবার ভাঙনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি হারিয়েছেন বাছের আলী। মাটির মায়া ছাড়তে চান না। কিন্তু উপায় তো নেই। দির্ঘদিনের মায়া ত্যাগ করে চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে আবারও নিজের ঘরবাড়ি ভাঙতে হলো তাকে। আর মুহূর্তেই নদীতে চলে গেছে বাছেরের শেষ সম্বল বসতভিটা। একইভাবে নিজেদের বসতভিটা নদীতে চলে যাওয়ায় থাকার ঘর নিরাপদে সরিয়ে নিতে ব্যস্ত আজাদুল ইসলাম। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাদের একটাই কথা, তা হলোÑ আর কত বসতবাড়ি খাবে এই নদী? এদিকে ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে আব্দুস সামাদ, আব্দুল হাকিম ও রনজু মিয়া, রোস্তম আলী, রফিকুল ইসলাম, ছাইফুল ইসলাম, ছায়দারসহ বেশ কিছু পরিবারের ভিটেমাটি।

এ ছাড়াও হুমকির মুখে রয়েছে রামনগর নয়াবাজার। কচুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহাবুবর রহমান জানান, পানি বেড়ে যাওয়ায় নদীর ভাঙনও বেড়ে গেছে। নদীভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলে জানিয়েছি।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোকলেছুর রহমান জানান, বাঙ্গালী নদীর ভাঙন এলাকায় লোক পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877